কমলাকান্তের দপ্তর - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
কমলাকান্তের দপ্তর
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
এক : - "নারিকেলের শস্য, স্ত্রীলোকের বুদ্ধি ।করকচি বেলায় বড় থাকে না; ডাবের অবস্থায় বড় সুমিষ্ট,বড় কোমল ; ঝুনোর বেলায় বড় কঠিন, দন্তস্ফুট করে কার সাধ্য ? তখন ইহাকে গৃহিণীপনা বলে ।" (- 'মনুষ্যফল' প্রবন্ধ )
দুই : - "তারপর মালা - এটি স্ত্রীলোকের বিদ্যা - কখন আধখানা বৈ পুরা দেখিতে পাইলাম না ।নারিকেলের মালা বড় কাজে লাগে না; স্ত্রীলোকের বিদ্যাও বড় নয় ।
মেরি সমরবিল বিজ্ঞান লিখিয়াছেন, জেন্ অষ্টেন্ জর্জ্জ এলিয়ট উপন্যাস লিখিয়াছেন - মন্দ হয় নাই,
কিন্তু দুই মালার মাপে ।" (- 'মনুষ্যফল' প্রবন্ধ )
তিন : - "ছোব্ড়া স্ত্রীলোকের রূপ । ছোব্ড়া যেমন নারিকেলের বাহ্যিক অংশ, রূপও স্ত্রীলোকের বাহ্যিক অংশ ।দুই বড় অসার ; - পরিত্যাগ করাই ভাল ।"
(- 'মনুষ্যফল' প্রবন্ধ )
চার : - "এ দেশে এক জাতি লোক সম্প্রতি দেখা দিয়াছেন তাঁহারা দেশহিতৈষী বলিয়া খ্যাত ।তাহাদের আমি শিমুল ফুল ভাবি ।যখন ফুল ফুটে, তখন দেখিতে শুনিতে বড় শোভা - বড় বড়, রাঙ্গা রাঙ্গা, গাছ আলো করিয়া থাকে ।" (- 'মনুষ্যফল' প্রবন্ধ )
পাঁচ : - "অধ্যাপক ব্রাহ্মণগণ সংসারের ধুতরা ফল ।বড় বড় লম্বা লম্বা সমাসে, বড় বড় বচনে, তাঁহাদিগকে অতি সুদীর্ঘ্য কুসুম সকল প্রস্ফুটিত হয় , ফলের বেলা কণ্টকময় ধুতরা ।" (- 'মনুষ্যফল' প্রবন্ধ )
ছয় : - "আমাদের দেশের লেখকদিগকে আমি তেঁতুল বলিয়া গণি । নিজের সম্পত্তি খোলা আর সিটে , কিন্তু দুগ্ধকেও স্পর্শ করিলে দধি করিয়া তোলেন ।গুণের মধ্যে কেবল অম্লগুণ - তাও নিকৃষ্ট অম্ল ।" (- 'মনুষ্যফল' প্রবন্ধ )
সাত : - "আর একটি মনুষ্যফলের কথা বলা হইলেই অদ্য ক্ষান্ত হই । দেশী হাকিমেরা কোন্ ফল বল দেখি ?
যিনি রাগ করেন করুন ; আমি স্পষ্টকথা বলিব, ইহারা পৃথিবীর কুষ্মাণ্ড ।যদি চালে তুলিয়া দিলে, তবেই ইঁহারা উঁচুতে ফলিলেন - নহিলে মাটিতে গড়াগড়ি যান । " (- 'মনুষ্যফল' প্রবন্ধ )
No comments
THANKS.