কালবৈশাখী -------মোহিতলাল মজুমদার
কালবৈশাখী
মোহিতলাল মজুমদার
মধ্যদিনের রক্ত নয়ন অন্ধ করিল কে !
ধরণীর 'পরে বিরাট ছায়ার ছত্র ধরিল কে !
কানন-আনন পাণ্ডুর করি
জলস্থলের নিশ্বাস হরি
আলয়ে-কুলায়ে তন্দ্রা ভুলায়ে গগন ভরিল কে!
আজিকে যতেক বনস্পতির ভাগ্য দেখি যে মন্দ, নিমেষ গনিছে তাই কি তাহারা সারি সারি নিস্পন্দ?
মরুৎ-পাথারে বারুদের ঘ্রাণ
এখনি ব্যাকুলি তুলিয়াছে প্রাণ?
পশিয়াছে কানে দূর গগনের বজ্রঘোষণ ছন্দ?
হেরি যে হোথায় আকাশকটাহে ধূম্র মেঘের ঘটা,
সে যেন কাহার বিরাট মুন্ডে ভীমকুন্ডল জটা!
অথবা ও কিরে সচল অচল -----
ভেদিয়া কোন্ সে অসীম অতল
ধাইছে উধাও গ্রাসিতে মিহিরে , ছিড়িয়া রশ্মিছটা !
ওই শোনো তার ঘোর নির্ঘোষ ,দুলিয়া উঠিল জটাভার শুরু হয়ে গেছে গুরু -গুরু রব--নাসা -গর্জন ঝঞ্ঝার ।
পিঙ্গল হল গলতলদেশ,
ধূলিধূসরিত উন্মাদবেশ----
দিবসের ভাগে টানিয়া খুলিছে বেণিবন্ধন সন্ধ্যার ।
অঙ্কুশ কার ঝলসিয়া উঠে দিক হতে দিক-অন্তে !
দিগ্ বারণেরা বেদনা-অধীর বিদারিছে নভ দন্তে ।
বাজে ঘন ঘন রণদুন্দুভি,
ঝরে সে আওয়াজ কভু যায় ডুবি ,
যুঝিতেছে কোন্ দুই মহাবল দ্যুলোকের দূর পন্থা!
বঙ্কিম-নীল অসির ফলকে দেহ হল কার ভিন্ন?
অনাবৃষ্টির অসুরের বাধা কে করিল নিশ্চিহ্ন ?
নেমে আসে যেন বাঁধ -ভাঙা জল,
ম্লান হয়ে আসে মেঘকজ্জল,
আলোকের মুখে কালো যবনিকা এতখনে হল ছিন্ন ।
হেরো, ফিরে চলে সে রণবাহিনী বাজায়ে বিজয়শঙ্খ,
আকাশের নীল নির্মল হল ---ধৌত ধরার পঙ্ক ।
বায়ু বহে পুন মৃদু উচ্ছ্বাসে
নদী উথলিছে কুলুকুলু ভাষে,
আলো-ঝলমল বিটপীর দল নিশ্বাসে নিঃশঙ্ক ।
নববর্ষের পুণ্য বাসরের কালবৈশাখী আসে ।
হোক সে ভীষণ, ভয় ভুলে যাই অদ্ভুত উল্লাসে ।
ঝড়-বিদ্যুৎ বজ্রের ধ্বনি ---
দুয়ার জানালা উঠে ঝনঝনি---
আকাশ ভাঙিয়া পড়ে বুঝি , তবু প্রাণ ভরে আশ্বাসে ।
চৈত্রের চিতা-ভস্ম উড়ায়ে জুড়াইয়া জ্বালা পৃথ্বীর,
তৃণ-অঙ্কুরে সঞ্চারি রস , মধু ভরি বুকে মৃত্তির,
সে আসিছে আজ কাল-বৈশাখে---
শুনি টংকার তাহার পিনাকে
ঝরে সে আওয়াজ কভু যায় ডুবি ,
যুঝিতেছে কোন্ দুই মহাবল দ্যুলোকের দূর পন্থা!
বঙ্কিম-নীল অসির ফলকে দেহ হল কার ভিন্ন?
অনাবৃষ্টির অসুরের বাধা কে করিল নিশ্চিহ্ন ?
নেমে আসে যেন বাঁধ -ভাঙা জল,
ম্লান হয়ে আসে মেঘকজ্জল,
আলোকের মুখে কালো যবনিকা এতখনে হল ছিন্ন ।
হেরো, ফিরে চলে সে রণবাহিনী বাজায়ে বিজয়শঙ্খ,
আকাশের নীল নির্মল হল ---ধৌত ধরার পঙ্ক ।
বায়ু বহে পুন মৃদু উচ্ছ্বাসে
নদী উথলিছে কুলুকুলু ভাষে,
আলো-ঝলমল বিটপীর দল নিশ্বাসে নিঃশঙ্ক ।
নববর্ষের পুণ্য বাসরের কালবৈশাখী আসে ।
হোক সে ভীষণ, ভয় ভুলে যাই অদ্ভুত উল্লাসে ।
ঝড়-বিদ্যুৎ বজ্রের ধ্বনি ---
দুয়ার জানালা উঠে ঝনঝনি---
আকাশ ভাঙিয়া পড়ে বুঝি , তবু প্রাণ ভরে আশ্বাসে ।
চৈত্রের চিতা-ভস্ম উড়ায়ে জুড়াইয়া জ্বালা পৃথ্বীর,
তৃণ-অঙ্কুরে সঞ্চারি রস , মধু ভরি বুকে মৃত্তির,
সে আসিছে আজ কাল-বৈশাখে---
শুনি টংকার তাহার পিনাকে
চমকিয়া উঠি ---তবু জয় জয় তার সেই শুভ কীর্তির।
এত যে ভীষণ, তবু তারে হেরি ধরায় ধরে না হর্ষ
ওরি মাঝে আছে কাল-পুরুষের সুগভীর পরামর্শ ।
নীল-অঞ্জন-গিরি-নিভ কায়া ,
নিশীথনীরব ঘনঘোর ছায়া ----
ওরি মাঝে আছে নববিধানের আশ্বাস দুর্ধর্ষ ।
এত যে ভীষণ, তবু তারে হেরি ধরায় ধরে না হর্ষ
ওরি মাঝে আছে কাল-পুরুষের সুগভীর পরামর্শ ।
নীল-অঞ্জন-গিরি-নিভ কায়া ,
নিশীথনীরব ঘনঘোর ছায়া ----
ওরি মাঝে আছে নববিধানের আশ্বাস দুর্ধর্ষ ।
No comments
THANKS.