সমাসের শ্রেণীবিভাগ ----------- তৎপুরুষ সমাস (প্রথম উপপর্ব )
সমাসের শ্রেণীবিভাগ ------- তৎপুরুষ সমাস
তৎপুরুষ সমাস :- যে সমাসের পূর্বপদের (কর্ম, করণ, সম্প্রদান, অপাদান, অধিকরণ প্রভৃতি ) কারকের
বিভক্তি চিহ্ন অথবা অনুসর্গের লোপ হয় এবং পরপদে
অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে ।
যথা:- বিস্ময় কে আপন্ন = বিস্ময়াপন্ন ;
ঢেঁকি দ্বারা ছাঁটা = ঢেঁকিছাঁটা ;
বিলাত হইতে ফেরত = বিলাতফেরত ।
এই সমাসের ব্যাসবাক্য গঠন করবার জন্য পূর্বপদের অর্থানুসারে বিভিন্ন কারকের বিভক্তিচিহ্ন অথবা বিভক্তিস্থানীয় অনুসর্গ যোগ করতে হয় ।
তৎপুরুষ সমাসকে ছয়টি উপভাগে ভাগ করা হয়।---
(১) কর্ম-তৎপুরুষ সমাস :- যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের কর্মকারকের বিভক্তিচিহ্ন 'কে 'লোপ পেলে
কর্ম-তৎপুরুষ সমাস হয় ।
যথা :- বধূকে বরণ = বধূবরণ; রথকে দেখা = রথদেখা; কলাকে বেচা = কলাবেচা ; দেশকে উদ্ধার = দেশোদ্ধার; ঘরকে মোছা = ঘরমোছা ; বাসনকে ধোয়া = বাসনধোয়া ;গাঁটকে কাটা = গাঁটকাটা ; লোককে দেখানো = লোকদেখানো ; ছেলেকে ভুলানো = ছেলেভুলানো । ইত্যাদি ।
যথা :- বধূকে বরণ = বধূবরণ; রথকে দেখা = রথদেখা; কলাকে বেচা = কলাবেচা ; দেশকে উদ্ধার = দেশোদ্ধার; ঘরকে মোছা = ঘরমোছা ; বাসনকে ধোয়া = বাসনধোয়া ;গাঁটকে কাটা = গাঁটকাটা ; লোককে দেখানো = লোকদেখানো ; ছেলেকে ভুলানো = ছেলেভুলানো । ইত্যাদি ।
(২) করণ-তৎপুরুষ সমাস :- যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের করণকারকের বিভক্তিচিহ্ন 'এ' 'তে ' এবং
' দ্বারা ' 'দিয়া' 'কর্তৃক' অনুসর্গের লোপ পেলে
করণ-তৎপুরুষসমাস হয় ।
যথা :- মন দ্বারা গড়া = মনগড়া ; অস্ত্রের দ্বারা আঘাত = অস্ত্রাঘাত ; অশ্রুতে ভরা = অশ্রুভরা ; দারিদ্র্যে ক্লিষ্ট = দারিদ্র্যক্লিষ্ট ; আশার দ্বারা হত = আশাহত ; গুরু-কর্তৃক দত্ত = গুরুদত্ত ; ছাতা দিয়া পেটা = ছাতাপেটা প্রভৃতি ।
যথা :- মন দ্বারা গড়া = মনগড়া ; অস্ত্রের দ্বারা আঘাত = অস্ত্রাঘাত ; অশ্রুতে ভরা = অশ্রুভরা ; দারিদ্র্যে ক্লিষ্ট = দারিদ্র্যক্লিষ্ট ; আশার দ্বারা হত = আশাহত ; গুরু-কর্তৃক দত্ত = গুরুদত্ত ; ছাতা দিয়া পেটা = ছাতাপেটা প্রভৃতি ।
(৩) সম্প্রদান-তৎপুরুষ সমাস :- পূর্বপদের সম্প্রদান কারকের 'কে' বিভক্তিচিহ্নটি লুপ্ত হলে সম্প্রদান-তৎপুরুষ সমাস হয় ।
যথা :- দেবকে দত্ত = দেবদত্ত ;
যথা :- দেবকে দত্ত = দেবদত্ত ;
তীর্থের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা = তীর্থযাত্রা ; ডাকের জন্য মাশুল = ডাকমাশুল ;
বিয়ের জন্য পাগল = বিয়েপাগল ইত্যাদি ।
(৪) অপাদান -তৎপুরুষ সমাস :- যে সমাসে পূর্বপদটির অপাদান কারকের 'এ' 'তে ' ইত্যাদি বিভক্তিচিহ্ন অথবা অনুসর্গের 'হইতে ' 'থেকে' 'চেয়ে' প্রভৃতি লোপ পেলে অপাদান-তৎপুরুষ সমাস বলে ।
যথা :- দুগ্ধ হইতে জাত = দুগ্ধজাত ; দূর হইতে আগত = দূরাগত ; জেল হইতে খালাস = জেলখালাস ; রাজা হইতে ভয় = রাজভয় ;
স্কুল থেকে পালানো = স্কুলপালানো ;
মেঘ ঽইতে মুক্ত = মেঘমুক্ত ইত্যাদি ।
(৫) অধিকরণ তৎপুরুষ সমাস :- পূর্বপদের অধিকরণ কারককে 'এ' (য়), 'এতে ' প্রভৃতি বিভক্তিচিহ্নের লুপ্ত হলে তাকে অধিকরণ -তৎপুরুষ সমাস বলে ।
যথা :-গাছে পাকা = গাছপাকা ; সভায় আসীন = সভাসীন ; অগ্রে গণ্য = অগ্রগণ্য ; ছায়ায় সুপ্ত = ছায়াসুপ্ত ; বিদ্যায় উৎসাহী = বিদ্যোৎসাহী ; মর্মে আহত = মর্মাহত ; গৃহে আগত = গৃহাগত ; বনে বাস = বনবাস ;
শীর্ষে স্থিত = শীর্ষস্থিত; গীতায় উক্ত = গীতোক্ত ; মনে মরা = মনমরা ; রাতে কানা = রাতকানা ; রূপে অনুরাগ = রূপানুরাগ ; অকালে পক্ক = অকালপক্ক ; আকাশে ভ্রমন = আকাশ-ভ্রমন ; দিনে কানা = দিনকানা ইত্যাদি ।
কয়েকটি ক্ষেত্রে অধিকরণ-তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের পরনিপাত হয় ।
যথা :- পূর্বে শ্রুত = শ্রুতপূর্ব ;
পূর্বে ভূত = ভূতপূর্ব ;
পূর্বে দৃষ্ট = দৃষ্টপূর্ব ;
পূর্বে অদৃষ্ট = অদৃষ্টপূর্ব ।
অনেকের মধ্যে একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বুঝাতে অধিকরণ তৎপুরুষ সমাস হয় ।
যথা:- কবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ = কবিশ্রেষ্ঠ ।
নরেদের মধ্যে অধম = নরাধম ।
নরেদের মধ্যে উত্তম = নরোত্তম ।
No comments
THANKS.