সম্প্রদান কারক / নিমিত্ত কারক
।।সম্প্রদান কারক /নিমিত্ত কারক ।।
যখন কোনো ব্যক্তি, প্রাণী বা বস্তুর নিমিত্ত বা জন্য নিঃসার্থভাবে কোনো ক্রিয়া সম্পাদন করা হয়,তখন যার নিমিত্ত করা হয়, তাকে নিমিত্ত কারক বা সম্প্রদান কারক বলে ।
যথা : -"ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও; " "অন্ধ জনে দেহ আলো;" "দেবতারে সমর্পিণু " প্রভৃতি বাক্যে ভিক্ষুককে ''ভিক্ষা'' দেওয়ার মধ্যে কোন কিছু ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা নেই ।অন্ধ জনকে "আলো "/দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দেওয়ার মধ্যে কোন স্বার্থ নেই ।
দেবতার উদ্দেশ্যে নিজেকে "সমর্পিত" করার পর তার আর কিছু ফিরে পাওয়ার আশা থাকে না ।
এখানে "ভিক্ষুক ", "অন্ধজন", " দেবতা" ।এদের প্রতি যা কিছু দেওয়ার কথা বলা হয়েছে পরিবর্তে বা
বিনিময়ে কিছু ফিরে পাওয়ার জন্য নয় অর্থাৎ নিঃসার্থভাবে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এগুলি সম্প্রদান কারক ।
"জমিদারকে খাজনা দাও "।" শ্রমিককে মজুরি দাও "।
"দোকানদারকে টাকা দাও "। প্রভৃতি বাক্যে দেওয়া-কাজটির মধ্যে নিঃসার্থপরতা নেই বিনিময়ে কিছু ফিরে পাওয়ার আশা আছে সেইজন্য ''জমিদারকে ", "শ্রমিককে ", "দোকানদারকে " । সম্প্রদান কারক বলা যাবে না ।এগুলি গৌণ কর্ম কারক হিসাবে পরিচিত ।
এই সূক্ষ্মাতিসূক্ষ পার্থক্য হেতূ বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদানকারক ও কর্মকারক নির্বাচন করা জটিলতার সৃষ্টি করেছে ।
।। অপাদান কারক ।।
যখন কোনো ব্যক্তি, বা বস্তু কোনো কিছু হইতে /থেকে পতিত, ভীত, চলিত, চ্যুত, রক্ষিত, বঞ্চিত, মুক্ত, গৃহীত, জাত ইত্যাদি বোঝালে, তাকে অপাদান কারক বলে ।
যথা :- "মেঘে বৃষ্টি হয় ", "বিপদে মোরে রক্ষা করো ",
"চোখ দিয়ে জল পড়ে ", "গাছ থেকে পাতা ঝরে ",
এখানে " মেঘে " "বিপদে" "চোখ " "গাছ " প্রভৃতি শব্দগুলো কোনো কিছু হইতে /থেকে চ্যুত, পতিত, রক্ষিত হচ্ছে তাই এই শব্দগুলো অপাদান কারক ।
।।অধিকরণ কারক ।।
যে স্থানে বা যে সময়ে কোনো ক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়,
ক্রিয়ার সেই আধার কে অধিকরণ কারক বলে ।
যথা :- "জলে থাকে মাছ ", "বনে থাকে বাঘ ",
ক্রিয়া অনুষ্ঠিত হওয়ার সময়, স্থান, ও বিষয় কে কেন্দ্র করে অধিকরণ কারককে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে ।
(১) স্থানাধিকরণ :- যে স্থানে ক্রিয়াটি অনুষ্ঠিত হয় সেই স্থানকে স্থানাধিকরণ কারক বলে ।
যথা :-"নীল আকাশে সাদা বক উড়ে চলেছে "।
"টাকাটা রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছি "।
"রাজা পূজা পায় নিজদেশে, বিদ্বান্ পূজা পায় সর্বত্র "।
(২) কালাধিকরণ : -যে সময়ে ক্রিয়াটি অনুষ্ঠিত হয়,
সেই সময়কে কালাধিকরণ কারক বলে ।
যথা :- " রবিবার সকালে বাজারে যাব "।
"শীতকালে দিন ছোটো, রাত বড়ো "।
" পৌষে প্রবল শীত "।
এখানে "সকালে " "শীতকালে" "পৌষে "এই
শব্দগুলো কালাধিকরণ ।
(৩) বিষয়াধিকরণ :- কোনো বিষয়ে বা ব্যপারে ক্রিয়া অনুষ্ঠিত হইলে বিষয়াধিকরণ হয় ।
যথা :- "তিনি ব্যাকরণে পণ্ডিত " ।
"মিতা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে প্রথম হয়েছে "।
এখানে "ব্যাকরণে" " উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে" এই শব্দগুলো বিষয়াধিকরণ কারক বলে ।
No comments
THANKS.